কক্কাস–ক্যাক্টাই (Coccus Cacti)
পরিচয়।-এটার অপর নাম কক্সিনেলা-ইন্ডিকা; কচিনীল।
ব্যবহারস্থল। -চুপিং-কাশি ও আক্ষেপিক-কাশি। ডাঃ ফ্যারিংটন সকাল বেলার হুপিং-কাশি রোগে এই ঔষধ প্রয়োগ করতে উপদেশ দেন। হাঁপানি, পৃষ্ঠবেদনা, পাথুরী, রক্তস্রাব, হৃৎপিন্ডের রোগ, ধ্বজভঙ্গ, মূত্রগ্রন্থি-প্রদাহ, যক্ষ্মা, আক্ষেপ প্রচুর রক্তস্রাব প্রভৃতি।
প্রদর্শক লক্ষণ। – হুপিং-কাশি, কাশির শেষে বমি হয়, বমিতে চটচটে দড়ির মত পদার্থ। সকালে ও সন্ধ্যায় রোগী বড়ই বিমর্ষ। শুইলে মাথাধরা বাড়ে ও বসলে কমে; চোখে কিছু পড়ে চোখের অসুখ। গলার মধ্যে খুসখুস করে কাশি। গলার মধ্যে কি যেন আটকিয়ে আছে, তার জন্য অনবরত ঢোঁক গিলবার ইচ্ছা। দাঁত মাজিবার সময় কাশি, কথা বলবার সময় কাশি। হাওয়ায় চললে হাঁপিয়ে পড়ে। প্রস্রাবে সুরকির মত তলানি। গলার কষ্ট-গরমে বাড়ে ও ঠান্ডা ঘরে কাশি কমে। রক্তস্রাব, বড় বড় ডেলার মত কাল রক্ত, উঠে বসলেই স্রাব হয়। অতিশয় দুর্বলতা। মনে হয় নখের নীচে কাঁচের টুকরা আছে। বুকে ষ্টারনাম-অস্থির নীচে জ্বালা, বুকে উত্তাপ ও টাটানি। কমিক বেদনা, সেই সঙ্গে খুব ক্ষুধা। কানের মধ্যে সোঁ সোঁ শব্দ, বা কান অত্যন্ত চুলকায়।
হুপিং–কাশি। হুপিং-কাশি রোগীর বমির সাথে দড়ির মত শ্লেষ্মা। ভোর ৬/৭ টার সময় বা ঘুম ভাঙ্গিবার পরই কাশি আরম্ভ হয়, যতক্ষণ পর্য্যন্ত না প্রচুর পরিমাণে গাঢ় আঠা বা দড়ির মত শ্লেষ্মা উঠে বা বমি হয়ে যায় ততক্ষণ অনবরত কাশি হতে থাকে। ডাঃ জুসো বলেন-হুপিং-কাশির প্রতি আক্রমণে নাক হতে প্রচুর পরিমাণে রক্তস্রাব। কোরাল-রুব্রাম – দিনেরবেলায় উপর্যুপরি কাশি এবং রাত্রিকালে হুপ-শব্দকারী কাশি। ড্রসেরা- পর পর দ্রুতবেগে কাশি হতে থাকে, রোগীর ঠিকমত নিঃশ্বাস গ্রহণ করতেও কষ্ট হয়। শয়নের পরে, রাত্রি দ্বিপ্রহরের পরে, পানি পানে হাসি বা ক্রন্দনে কাশি বাড়ে। এটা সংক্রামক হুপিং-কাশির একটি বিশিষ্ট ঔষধ। কক্সিনেলা – প্রবল হুপিং কাশি অথবা আক্ষেপিক কাশি নিবৃত্ত হওয়ার পরেই, মুখ দিয়ে হড়হড়ে লালা নিঃসরণ হয়, দড়ির মত লম্বা হয়ে বের হয়, (কেলি-বাইক্রমিকামের মত)। ক্যাক্টেনিয়া-ভেঙ্কা – প্রথম অবস্থায় প্রবল আক্ষেপিক কাশিতে উপযোগী। কিউগ্রাম-সালফ –রাতে বৃদ্ধিযুক্ত অনবরত আক্ষেপিক কাশি মিফাইটিস শয়নের পরে বৃদ্ধিযুক্ত হুপিং-কাশি, কাশির শেষে হুপ শব্দ। কাশতে কাশতে বুকে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। আহারের অনেক পরে ফাসিলেও ভুক্তদ্রব্য বমি হয়ে যায়। ষ্ট্যাফিসেগ্রিয়া- কেবলমাত্র দিনের বেলায় কাশি, আহারের পরে বৃদ্ধিযুক্ত কাশি।
প্রস্রাবের রোগ।– হতে হতে মূত্রনলীর সঙ্কোচন। বারংবার প্রস্রাব করার ইচ্ছা। প্রস্রাবে ইঁটের গুড়ার মত তলানি পড়ে। প্রস্রাবে প্রচুর ইউরিক অ্যাসিড থাকলে উপকার পাওয়া যায়। তুলনীয়।– লাইকোপোডিয়াম -প্রস্রাবে লাল বালুকার মত তলানি। চিমাফিলা -প্রস্রাবে ইঁটের গুঁড়ার মত লালবর্ণের তলানি, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ। প্রস্রাব করার সময়ে অত্যন্ত জ্বালা ও পরে বেগ, মনে হয় যেন আরও প্রস্রাব হবে। ককিউলাস-প্রস্রাবে প্রচুর পরিমাণে ইউরেট এবং ইউরিক অ্যাসিড থাকে। ইকথিওলাম- প্রস্রাবে ইউরিক অ্যসিডের পরিমাণ অধিক, বার বার প্রস্রাবের বেগ।
স্ত্রীরোগ।– ঋতু অতি শীঘ্র শীঘ্র প্রকাশিত হয়। রক্তস্রাব অপ্রচুর, গাঢ় ও কালবর্ণের সেইসঙ্গে মূত্রস্বল্পতাও দেখা যায়। সন্ধ্যাবেলা ও রাত্রে শায়িত অবস্থায় অধিক পরিমাণে রক্তস্রাব হয়। বড় বড় জমাট রক্তস্রাব বের হওয়া এটার বৈশিষ্ট্য।
তুলনীয়। – ক্যাক্টাস-রক্তস্রাব কেবলমাত্র শয়ন করলে হয়। পালসেটিলা-কেবলমাত্র দিনের বেলায় রক্তস্রাব। কষ্টিকাম, লিলিয়াম-টিগ – কেবলমাত্র পাদচারণ করলে রক্তস্রাব। সম্বন্ধ। প্রস্রাবের রোগে-ক্যান্থারিস, সার্সাপেরিলা, প্যারাইরা ব্রাভা ও আর্টিকা-ইউরেন্সের সমতুল্য; স্ত্রীজননেন্দ্রিয়ের রোগে-ক্রোকাস, ম্যাগ-কার্ব ও প্ল্যাটিনা তুল্য।
বৃদ্ধি।-উত্তাপে, গরম ঘরে; বিছানার উত্তাপে; রাত্রে; অতি প্রত্যুষে; ঘুম ভাঙ্গার পর; কাশলে; শুইলে; মানসিক শ্রমে।
হ্রাস। খোলা হাওয়ায়; চলে বেড়ালে।
শক্তি।৬, ২০০ শক্তি ব্যবহার্য্য।