ক্যালকেরিয়া আয়োডেটা (Calcarea lodata)

পরিচয়।-এটার অপর নাম আয়োডাইড-অভ-লাইম।

ব্যবহারস্থল। -বালিকার্দিগের যৌবনারম্ভকালীন উপসর্গে, গলগ্রন্থির বিবৃদ্ধি বা গলগন্ড রোগে, শ্লেষ্মাপ্রধান ও মোটাসোটা শিশুদের সর্দি, জরায়ুর তন্তুময় অর্বুদ, ক্যান্সার প্রভৃতি। ঔষধটি ক্যাল্কেরিয়া ও আয়োডিনের সংমিশ্রণে প্রস্তুত, সুতরাং ক্যাল্কেরিয়ার মোটাসোটা চেহারা এই আইওডিনের গ্রন্থি বৃদ্ধি এটার চরিত্রগত লক্ষণ। ক্যাল্কেরিয়া শীতকাতর কিন্তু আইওডিন গরম কাতর। সুতরাং রোগী ঠান্ডা চাইলেও ঠান্ডাতেই রোগ লক্ষণ বাড়ে। রোগীর ভয়ানক ক্ষুধা দেখা যায়, কিন্তু শরীরের পুষ্টি ঠিক মত হয় না। সহজেই ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়ে। শরীরে যত রকমের গ্রন্থি আছে তার প্রায় সকলগুলিই আক্রান্ত হয়ে থাকে। তরুণ রোগে এই ঔষধ ব্যবহার করা কৰ্ত্তব্য নয়। এটার ক্রিয়াও সুগভীর। গন্ডমালা ও গুটিকা দোযগ্রস্ত রোগীর পক্ষে উপযোগী।

মন। – সকল বিষয়েই ঔদাসীন্য প্রকাশ করে কিন্তু আইওডিনের মানসিক চাঞ্চল্য বৰ্ত্তমান থাকে।

শিরঃরোগ।-ঠান্ডা বাতাসের প্রতিকূলে ঘোড়ায় বা সাইকেলে চললে মাথার যন্ত্রণা অনুভব করে। ডানদিকে বেদনা অধিক। (জোরে বাতাস লাগলে মাথার যন্ত্রণা বাড়ে-অ্যাকোনাইট, বেলেডোনা, চায়না, কলোসিন্থ, নাক্স ভমিকা, ভ্যালিরি। ঠান্ডা বাতাসে মাথার যন্ত্রণার বৃদ্ধি-চায়না, অ্যাসিড-মিউর)।

সর্দি।-সর্দি হয়ে রোগীর নাসামূলে বেদনা হয়, সর্দির একটি বিশেষত্ব এই যে, সর্দিতে হাঁচি থাকে না। টিউবারকুলার বা গন্ডমালাধাতুগ্রস্ত পুরাতন ব্যক্তির পুরাতন সর্দিরোগে। নাকের ভিতর বা কাণের ভিতর ঝিল্লীময় অর্বুদ বা পলিপাস রোগেও এটা ব্যবহৃত হয়।

টন্সিলাইটিস। -গ্রুফিউলা ও টিউবারকুলার ধাতুবিশিষ্ট ব্যক্তিদের টন্সিলাইটিস রোগে স্ফীত ও টন্সিলের স্থানে স্থানে ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। রোগী ঠান্ডা এবং খোলা বাতাসে থাকতে চায় বটে, কিন্তু সহ্য করতে পারে না।

কাশি। – বহুদিনের পুরাতন কাশি, সেটা যক্ষ্মাই হোক বা পুরাতন ব্রহ্মাইটিসই হোক, সেটার সাথে বিলেপী-জ্বর বিদ্যমান থাকে। দিনরাত্রি সমভাবেই কাশি হয়; পুঁজের মত হলুদবর্ণের গয়ার বের হয়। গ্রীবা-গ্রন্থির অত্যধিক স্ফীতি। রোগী অত্যন্ত খাই-খাই করে, কিন্তু যতই আহার করুক না কেন, শরীর পুষ্ট না হওয়া এটার বিশেষ লক্ষণ। ক্যাল্কে-আয়োড রোগী খুব ঠান্ডা খাদ্যদ্রব্য খেতে চায়। এটার শুল্ক কাশি প্রায়ই সন্ধ্যার দিকে হয়, সেইসঙ্গে জ্বরের প্রকোপও বেশী দেখা যায়।

চর্মরোগ।-ক্যাল্কে-আয়োড রোগীর শরীরের স্থানে স্থানে চুলকানি হয়, চুলকানি একস্থান হতে অন্যস্থানে ঘুরে বেড়ায়, বহুক্ষণ চুলকাবার পর চুলকানির নিবৃত্তি হয় (ডাল্কামারা, ফস)।

সমগুণ-ঔষধ। -ক্যাল্কে-কার্ব, ক্যাল্কে-ফস, ক্যাঙ্কে-ফ্লোর, আইয়োড, মার্ক-আইয়োড। বৃদ্ধি।-ঠান্ডায় রোগের বৃদ্ধি, কিন্তু রোগী ঠান্ডায় থাকতে চায়।

শক্তি।– ৩x, ৬x, বিচূর্ণ ক্রম, ৩০, ২০০ শক্তি সাধারণতঃ ব্যবহৃত হয়।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!