অ্যাজাডিরেক্টা–ইন্ডিকা (Azadirachta indica)
পরিচয়।—নিম গাছের ছাল হতে এই ঔষধটি প্রস্তুত হয়। নিমের সকল অংশই অতি প্রয়োজনীয় ঔষধার্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিমের হাওয়া স্বাস্থ্যপ্রদ এবং বহু রোগ নাশক। নিমের পাতা মুষ্টিযোগরূপে ফোঁড়া (অনুপান ভেদে, বসাইতে, পাকাইয়া ফাটাইতে ও ক্ষত শুকাতে) ও ক্ষত এমন কি দূষিত ক্ষতেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিমের মাজন এবং নিমের ডালের দাঁতন দন্ত এবং মুখরোগ নাশক ও প্রতিষেধক।
ব্যবহারস্থল।—বৈকালিক জ্বর ও শরীরের নানাস্থানে বেদনা। বুকের মাঝের হাড়টিতে, পাঁজরায়, পিঠে, কাঁধে ও হাতে-পায়ে বেদনা, হাতে, বিশেষতঃ তালু ও অঙ্গুলতে উত্তাপ, খোঁচামারার মত বেদনা। বিস্মৃতিপ্রবণ বা ভোলামন। নিম একটি জ্বরঘ্ন ঔষধ। বর্দ্ধিত প্লীহা ও যকৃৎ এবং তজ্জনিত ঘুষঘুষে জ্বর প্রভৃতি এটা সেবনে নির্দোষরূপে আরোগ্য হয়। নিম ম্যালেরিয়া ও নানাপ্রকার পুরাতন জ্বরের মহৌষধ। জ্বালা এটার বিশেষ লক্ষণ। শরীরে প্রচুর ঘাম। চোখ ও হাত-পায়ের তলা জ্বালা করে। অপরাহ্নে বৃদ্ধি।
স্মৃতিহীনতা।—রোগী কিছুই মনে করে রাখতে পারে না, এমন কি অতি পরিচিত লোকের নামও মনে আসে না, গিলতে ভুল করে, কথা বলতে ভুল হয়। এস্থলে তুলনায় –অ্যানাকার্ডিয়াম, লাইকোপোডিয়াম)।
জ্বর। নূতন, পুরাতন, বিষম সকল প্রকৃতির জ্বরেই এটা বিশেষ উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রায়ই বৈকালের দিকে জ্বর আসে, পিপাসা থাকে না, অথবা অল্প হয়। পিত্তাধিক্য এটার বিশেষত্ব, চোখ-মুখ, হাত-পা জ্বালা। কুইনাইনের অপব্যবহারের পরের পুরাতন জ্বর। পালসেটিলার সমকক্ষ, একই প্রকারের লক্ষণ কিন্তু পালসেটিলাতে প্রায়ই উদরাময় থাকে, এতে থাকে কোষ্ঠবদ্ধতা। প্রমেহ ও ধাতুদৌবল্যযুক্ত ঘুষঘুষে জ্বর।
হাঁপানি এবং কাশি।—স্বরভঙ্গের সঙ্গে শুষ্ক কাশি। উভয়স্থলেই বক্ষঃস্থলে খোঁচামারা বেদনা থাকে।
চর্ম্মরোগ। শরীরের নানাস্থানে চুলকানি কিন্তু কোন উদ্ভেদ দেখা যায় না (ডলিকস-এর মত)। কুষ্ঠব্যাধিতেও এটা উপকারী। দেশীয় থানকুনি হতে প্রস্তুত হাইড্রোকোটাইল-এসিয়াটিকাও কুষ্ঠব্যাধির একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।
জননেন্দ্রিয় সংক্রান্ত ব্যাধি। —পুংজননেন্দ্রিয়ের উত্তেজনা বেশী, অথচ সঙ্গম প্রবৃত্তির হ্রাস। স্ত্রীলোকদের মাসিক ঋতুস্রাবের পরিমাণ অল্প; প্রদর স্রাবে রক্তের ছিট থাকে, পেটে বেদনা। লোকিয়া বা প্রসবান্তিক স্রাব পচা দুর্গন্ধযুক্ত এবং অনেকদিন ধরে চলে।
শক্তি।– ৩x, ৬x, ৩০। কখন কখনও ২০০ শক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।