অ্যান্থ্রাকসিনাম (Anthracinum)
পরিচয়।এটা একটি নোসোড বা রোগ-বিষজাত ঔষধ।
ব্যবহারস্থল।—ডাঃ ক্লার্কের মতে বিষফোঁড়া, পচনশীল বড় ফোঁড়া, ক্ষত, বিসর্প, প্রদাহযুক্ত ক্ষত, আঙ্গুলহাড়া এবং নানাবিধ উদ্ভেদ ও ক্ষতে বিশেষ ফলপ্রদ ঔষধ। এটা কার্যাঙ্কল ক্ষেত্রে আর্সেনিকে ও ট্যারেনটুলার সমতুল্য। কার্বাঙ্কলে অত্যধিক জ্বালা ও সেই সঙ্গে ক্ষত হতে বার বার দুর্গন্ধযুক্ত পর্দা উঠতে থাকলে, অ্যান্থানিসাম প্রয়োগে জ্বালার উপশম হয়।
প্রদর্শক লক্ষণ।– ফোঁড়া, কার্বাঙ্কল প্রভৃতি উদ্ভেদে অসহ্য জ্বালা। শরীরের যে-কোন দ্বার হতে রক্তস্রাব, রক্ত আলকাতরার মত কাল। গ্ল্যান্ডের ফোলা, সেলুলাইটিস, জ্বালা। সেটিক অবস্থা। গা, পচনশীল ঘা, জ্বালা। কাল বা নীল উদ্ভেদ। পোকামাকড় কামড়ালে। নাকে দুর্গন্ধ ঢুকবার পর কোন রোগ হলে। সর্বপ্রকার স্রাবে দুর্গন্ধ। বসন্তরোগ, জ্বালা, দুর্গন্ধ। ঘা ও তা হতে পচা গন্ধ।
কার্বাঙ্কল। -আন্থাসিনাম রোগীর বিষফোঁড়ায় অনেক ছোট ছোট ছিদ্র হয়ে সেটা হতে পানির মত তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়, রাত্রি দ্বিতীয় প্রহরের পর জ্বরের বৃদ্ধি হয়, জ্বালার জন্য রোগী আক্রান্ত স্থানে পানি ঢালিয়া দিতে চায়। আঙ্গুল-হাড়ার রোগী আধ পাগলের মত ব্যবহার করতে থাকে। বিষাক্ত কীট-পতঙ্গাদির দংশনের ফলে যদি আক্রান্ত স্থান স্ফীত হয়, আক্রান্ত স্থানের বর্ণ পরিবর্তিত হয় এবং সেখানে ভয়ানক জ্বালা থাকে, তবে অ্যান্থাসিনাম কার্যকরী। সদৃশ। কার্বাঙ্কলে জ্বালা ত আছেই, সেই সঙ্গে পিপাসা, ছট্ফটানি, মৃত্যুভয় এবং আক্রান্ত স্থান গরম সেঁকে উপশম। ট্যারেনটুলা—জ্বর ১০৪° ডিগ্রী বা তদূর্ধ্ব, সেই সঙ্গে ভীষণ গাত্রদাহ, ছট্ফটানি এবং কার্বাঙ্কলের ভিতর দাহ ও জ্বালা হয়। ইউফরবিয়াম কার্বাঙ্কলের ভিতর যেন কেউ একখন্ড জ্বলন্ত অঙ্গার স্পর্শ করছে এরূপ অনুভব হয়।
শব-ব্যবচ্ছেদের সময় যদি অসাবধানতা বশতঃ কোন স্থান কেটে বিষাক্ত হয় ও সেই সঙ্গে রোগীর জ্বর হতে থাকে এবং আক্রান্ত স্থানে ভীষণ জ্বালা অনুভব করে, তবে অ্যান্থাসিনাম দ্বারা আশাতীত সুফল পাওয়া যায় (আর্স, পাইরো)। অ্যান্থাসিনায় রোগী মনে ভাবে যেন, তার মাথার ভিতর হতে গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে। রোগী মনে করে তার মৃত্যু অতি নিকটবর্ত্তী। বগলের গ্রন্থিসকল স্ফীত হয়, পচনপ্রবণ কর্ণমূল, গল-গ্রন্থি ও তালুমূল-গ্রন্থি। তুলনীয়। –আর্স, পাইরোজেন, ল্যাকেসিস, ক্রোটেলাস, একিনেসিয়া, ট্যারেন্টুলা।
শক্তি।–৩০, ২০০ তদূর্ধ্ব।