অ্যাকালাইফা-ইণ্ডিকা (Acalyphaindica)

পরিচয়। — মুক্তঝুরী; সংস্কৃত নাম মুক্তবর্ষী (ভারতীয় ঔষধ)।

ব্যবহারস্থল। রক্তোৎকাশি; যক্ষ্মার কাশি; অভিসার; পেটফাঁপা ও কোষ্ঠবদ্ধতা।

প্রদর্শক লক্ষণ। ফুস্ফুস্ হতে রক্তস্রাব সকালে উজ্জ্বল লালবর্ণের রক্ত। সন্ধ্যায় কাল-কাল ডেলা-ডেলা রক্ত। ধীরে ধীরে শরীর শীর্ণ হয়। শুষ্ক কাশি রাত্রে বেশী। সর্বদা বুকে, বিশেষতঃ বাঁদিকে ভয়ানক যন্ত্রণা। উদরাময়, মল সশব্দে বের হয় ও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মলদ্বার হতে রক্ত পড়ে, সকালে বেশী। ন্যাবা; পেটে বায়ু, পেটে ব্যথা। সকল লক্ষণেরই ভোরের দিকে বৃদ্ধি

রক্তোৎকাশি। -যক্ষ্মা রোগের প্রথমাবস্থায় সকালে শুষ্ক কাশির সাথে উজ্জ্বল রক্ত এবং সন্ধ্যাবেলা ও রাত্রে চাপ চাপ কাল রক্ত নিঃসরণ এটার প্রধান নির্দেশক লক্ষণ। ডাঃ টার্ণিয়ার এই ঔষধ প্রথম পরীক্ষা করেন। তিনি বলেন—শুষ্ক কাশির সাথে তাজা রক্ত নিঃসৃত হলে অ্যাকালাইফা সর্বশেষ্ঠ ঔষধ।

সদৃশ ঔষধ।-জিরেনিয়াম-ম্যাকিউলেটাম – এটাও ফুসফুস হতে রক্তপাতের এবং রক্ত- কানের জন্য উপযোগী। ডাঃ বোরিক বলেন- যে কোন স্থান হতে ঝলকে ঝলকে রক্ত উঠে রোগীকে অবসন্ন করে দিলে জিরেনিয়াম ব্যবহার্য্য। অ্যাকোনাইট – যে কোন রোগের প্রথম অবস্থায় লালবর্ণের উজ্জ্বল রক্তস্রাব, জ্বর, পানিপিপাসা ও ছটফটানি। ইপিকাক উজ্জ্বল লালবর্ণের রক্ত উঠা বা রক্ত-কমন সেই সাথে গা-বমি-বমি ও শ্বাসকষ্ট। মিলিফোলিয়াম-জ্বর বা বেদনাশূন্য অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে উজ্জ্বল লালবর্ণের রক্ত উঠা। লেডাম-মাতাল ও বাতগ্রস্ত রোগীদের মুখ দিয়ে “ফেনা-ফেনা” লাল রক্ত। হ্যামামেলিস—যে কোন দ্বার দিয়েই প্রচুর পরিমাণে কালচে রক্তস্রাব। চায়না অত্যধিক রক্তস্রাব, রক্তস্রাবের পর রোগীর সর্বশরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। ফস্ফোরাস –ঋতু বন্ধ হয়ে ফুসফুস হতে রক্ত উঠা (পাস) ক্ষয় রোগের প্রথমাবস্থায় উজ্জ্বল, রক্তমিশ্রিত গয়ার। লাইকোপাস- ক্ষয়রোগ, গলার ভিতর সুড়সুড় করে কাশি ও সেই সাথে রক্ত উঠা।

প্রাতঃকালীন উদরাময়। —মল সশব্দে ও বেগে বের হয়, সেইসঙ্গে ভয়ানক কোথানি থাকে, পেটে গড়গড় শব্দ হয় ও পেট ডাকে, পেট ফাঁপে ও পেট কামড়ায়। সকালে মলদ্বার হতে প্রচুর রক্তস্রাব

তুলনীয়।—প্রাতঃকালীন উদরাময়ে ব্রাইয়োনিয়া, পেট্রোলিয়াম, পডোফাইলাম, সোরিণাম, সাক্কার, রিউমেক্স, থুজা প্রভৃতি কয়েকটি ঔষধ বিশেষ উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ভোরে ঘুম ভাঙ্গিবামাত্র পায়খানায় দৌড়াতে হয়—সোরিণাম, রিউমেক্স, সালফার। সালফার- ভোরে আরম্ভ হয়ে বেলা ১০টায় বন্ধ। সোরিনামের মলে অত্যধিক দুর্গন্ধ থাকে, রোগীর সোরাদুষ্টি এবং সামান্য ঠান্ডাও সহ্য করতে পারে না। রিউমেক্সের রোগীরও ঠান্ডা এবং ঠান্ডা হাওয়া সহ্য হয় না বরং এইসঙ্গে প্রায়ই কাশি বর্তমান থাকে। পেট্রোলিয়ামে কেবলমাত্র দিবাভাগের বাহ্যে, রাত্রে কখনও হয় না, ঝড়-বৃষ্টিকালে এবং গাত্রচর্মের উদ্ভেদ বসে বৃদ্ধি, মলে অজীর্ণ থাকে। নুফার- লুটিয়ায় ভোর ৪টা হতে ৭টায় বৃদ্ধি, মলে অত্যন্ত দুর্গন্ধ। নেট্রামসাক্ষ— নিদ্রাভঙ্গের কিছু পরে আরম্ভ, পেটফোলা এবং পেটডাকা এটার বিশেষ লক্ষণ। ব্রাইয়োনিয়া— নড়াচড়া এবং শরীর গরম হলে বাড়ে; ঠান্ডা খেয়ে উদরাময় হলে। পডোফাইলামে প্রচুর পরিমাণে দুর্গন্ধ মল পিচকারীর মত তোড়ে বের হয়; পেটে বেদনা থাকে না। থুজায় মল বেগের সঙ্গে বের হয়। মলত্যাগকালে বায়ুনিঃসরণ, পেটে গলগল শব্দ, টিকা লবার পরে উদরাময়ে বিশেষ উপযোগী।

পান্ডুরোগ বা ন্যাবা হয়ে স্বাস্থ্য-বিকৃতি, সমস্ত শরীরে উদ্ভেদ ও সেই সাথে পেটে বায়ু ও পেটফাঁপা

বৃদ্ধি। সকালে।

শক্তি। সাধারণতঃ ১x, ৩x, কখনও ৬, ৩০, ২০০।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!