ক্যালকেরিয়া–কার্ব্বোনিকা (Calcarea Carbonica)
পরিচয়।-এটার অপর নাম কার্বোনেট-অফ্-লাইম। ডাঃ হেরিং এই ঔষধকে ক্যাল্কেরিয়া- অস্ট্রিয়েরাম নামে অভিহিত করেছেন ঔষধটি সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস এই ত্রিদোষনাশক।
ব্যবহারস্থল। -মোটা থলথলে শিশুর অম্লরোগ, রক্তাল্পতা, অস্থি-বিকৃতি, ক্ষুধা-বিকৃতি, সর্দি, যক্ষ্মারোগ, পুরাতন কাশি, মেদবৃদ্ধি, নানাবিধ চর্মরোগ, দন্তোদ্গমকালীন নানাবিধ রোগ, অজীর্ণ, কর্ণস্রাব, মৃগী, চোখের নানাবিধ রোগ, নানাজাতীয় জ্বর, নালীক্ষত, পাথুরী, গলগন্ড, সন্ধিবাত, মস্তিষ্কে জলসঞ্চয়, মূৰ্চ্ছাবায়ু, ধ্বজভঙ্গ, স্তনদুধের বিকৃতি, শ্বেত প্রদর ও নানাবিধ স্ত্রীরোগ, কৃত্রিম মৈথুনজনিত রোগ, জিহবামূলে অর্বুদ, গর্ভাবস্থার রোগ, গন্ডমালা, চর্মরোগ, আঁচিল, দাঁতের নানা রোগ, আঙ্গুল- হাড়া, শিরঃরোগ প্রভৃতি।
প্রদর্শক লক্ষণ।– কোষ্ঠবদ্ধতা থাকলে রোগী সর্ব-বিষয়ে সুস্থ বোধ করে। মল অত্যন্ত বড়। প্রথমে শক্ত তারপর নরম, তারপর পাতলা। সাদা মল। উদরাময়। টক গন্ধ। পচা গন্ধ। দাঁত উঠবার সময়। মল তরল ও কটা। সাদা ও হলদে। মলের সঙ্গে ক্রিমি থাকে। খাদ্যবস্তু মলের সঙ্গে গোটা গোটা থাকে। পেট জলপূর্ণ থালার মত ফুলে উঠে। পেটে চাপ দিলে কষ্ট হয়। মাথা বড়, পেট বড়, মাথার হাড় ফাঁক, জোরে না, হাড় নরম, মোটা থলথলে। ফ্যাকাশে চামড়া, এরূপ শিশু। মাথায় অত্যন্ত ঘাম জ্বরের মধ্যে ঘামে। মাথায় ঘাম, বালিশ ভিজে যায়। মাথার পিছনদিকে ও ঘাড়ে ঘাম বেশী। রক্তসঞ্চালনের অসমতা। সমস্ত শরীরে ঠান্ডাভাব বা শীতলতা। যেন পায়ে ভিজা মোজা পরান আছে। অম্ল ও অজীর্ণ, টক উদ্গার, টক বমি, শরীরেও টক গন্ধ, মলে টক গন্ধ। মোটাসোটা থলথলে দেহ কিন্তু দুর্বল ও অলস প্রকৃতি। ঠান্ডা ভিজা জায়গায় দাঁড়িয়ে রোগ। ঠান্ডা পানিতে দাঁড়িয়ে কাজ করায় রোগ। সামান্য ঠান্ডাতেই সর্দি লাগে, গলায় ব্যথা হয়। নাকে পলিপাস। নাকের ভিতরে ঘা, মামড়ী। সকালে নাক হতে রক্ত পড়ে। দুধ হজম হয় না। দুধ খেলে গা-বমি-বমি করে ও টক ঢেঁকুর উঠে। ডিম অতি প্রিয় খাদ্য। -গয়ার, গাঢ়, শ্লেষ্মা ধূসরবর্ণ, হলদে, পচাগন্ধ, রক্তময় পুঁজের মত। বেদনাহীন স্বরভঙ্গ, তা হতে যক্ষ্মা সম্ভাবনা। দুর্বলতার জন্য সিঁড়িতে উঠবার সময় মাথা ঘোরে। মাথার মধ্যস্থল গরম, এজন্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে চায় প্রস্রাবে দুর্গন্ধ। চোখ বুজলে রোগী ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে। শ্বেত প্রদর, স্রাব দুধের মত, জ্বালা করে, চুলকায়। শিশুর প্রদরস্রাব। পেটে বায়ু সঞ্চয়, টান করে কাপড় পরা সম্ভব নয়। কাপড় আলগা করা দরকার আসে। খোলা হাওয়ায় থাকতে চায় না; শীতকাতর। স্তনের বোঁটা ফাটা, ঘা, হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় না। বালিকা, বন্ধ্যা-স্ত্রীলোক, যাদের মাসিক স্রাব প্রচুর পরিমাণে ও ১০/১২ দিন স্থায়ী। ক্রমে ঋতুলোপ পেয়ে শোথভাব দেখা দেয়। পুরাতন রোগ একদিন ভাল থাকে ও হয়। ভাবে শরীরের উপর ইঁদুর চলছে (হিষ্টিরিয়া)। বেলা ২টার সময় শীত করে জ্বর তারপর দিন রোগ বাড়ে। আবার ভাল থাকে, আবার বাড়ে।
গঠন ও স্বভাব। -ক্যাল্কে-কার্ব ধাতুর শিশু এবং পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির চেহারা মোটাসোটা, থলথলে, নড়িতে-চড়িতে বিশেষ কষ্ট হয়। শিশুর হাড়গুলি নরম এবং মেদের অংশ অত্যধিক, কিন্তু মাংসপেশীসকল শিথিল, গলা ও হাত-পা সরু, গ্রীবার গ্রন্থিসকল ফুলা। সহজে প্রচুর ঘাম, বিশেষতঃ মাথায় প্রচুর ঘাম এটার বৈশিষ্ট্য। বাহ্যে, বমি ও ঘাম টক গন্ধযুক্ত। শিশু বিলম্বে হাঁটতে শিখে, দাঁত উঠবার কালে নানাপ্রকার উপসর্গ প্রকাশ পায়। মেরুদন্ড বক্র। শিশুর গায়ের বর্ণ যদিও গৌর, কিন্তু সেটা পানির মত ফ্যাকাসে। দাঁত উঠবার সময় শিশু দুধ সহ্য করতে পারে না। ঠান্ডা মোটেই সহ্য করতে পারে না। ডাঃ গ্যারেন্সি বলেন-রোগীর মাথাটি প্রকান্ড, মুখাকৃতি বড়, গায়ের রং পান্ডু, শিশুদের ব্রহ্মতালু খোলা, শ্লেষ্মা ও রসপ্রধান ধাতু। বয়স্ক রোগী ঠান্ডাবোধ করে। সামান্য মানসিক উত্তেজনায় রোগিণীর অত্যধিক রক্তস্রাব হয়। চেহারা মোটাসোটা থলথলে, চুলের অগ্রভাগ প্রায়ই কটাবর্ণ, কিন্তু সে দুর্বল, চলতে হাঁপায়। শরীর গৌরবর্ণ ও অলস প্রকৃতি। সর্বদা গঠন ও স্বভাবের দিকে লক্ষ্য রেখে ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব ব্যবহার করা উচিত।
তুলনীয়। -ক্যাল্কেরিয়া ফস- দন্তোদ্গামকালে শিশুদের পক্ষেই অধিকতর উপযোগী, (যৌবনে পা দিচ্ছে এরূপ বালক-বালিকা এবং বৃদ্ধদের রোগেও হামেশা ব্যবহৃত হয়)। পাতলা, শীর্ণ রক্তহীন চেহারা। অত্যধিক জীর্ণশীর্ণতা, মস্তকের অস্থি পাতলা, ব্রহ্মরন্ধ্র দীর্ঘকাল জোড়া না লাগা অবস্থায় থাকে। ঘাড় দুর্বল, সেজন্য শিশু মাথা তুলতে পারে না। নেট্রাম-মিউর উপযুক্ত আহার সত্ত্বেও শিশু জীর্ণশীর্ণ, দুর্বল, শরীরের নিম্নভাগ অপেক্ষা মুখমন্ডল অধিক লাল, লবণ বেশী খায়। সাইলিসিয়া – মাথা বড়; বয়স বৃদ্ধি সত্ত্বেও মাথার হাড় জোড়া লাগে না, দুর্গন্ধ প্রচুর ঘাম। হাত-পা ঠান্ডা। আব্রোটেনাম-উপযুক্ত আহার সত্ত্বেও শিশু ক্রমে শুকাতে থাকে ঊর্ধ্বাঙ্গ অপেক্ষা পদদ্বয়ই বেশী শীর্ণ হতে থাকে। পেট মোটা। ব্যারাইটা-কার্ব-শারীরিক ও মানসিক উভয় প্রকারের জড়তা। শরীরের বৃদ্ধি এবং পুষ্টি ধীরে ধীরে হয়।
মন। -রোগীর মন সদাই ভয়যুক্ত, সে কেবলই মনে ভাবে এই বুঝি বুদ্ধি লোপ পেয়ে গেল। সামান্য ব্যাপারেই অত্যন্ত চিন্তিত হয়। চিন্তা সন্ধ্যাবেলাই বেশী হয়। কোনরূপ মানসিক পরিশ্রম করতে আরম্ভ করলেই মাথা গরম হয়। রাত্রে নানারূপ স্বপ্ন দেখে সদাই মাথাঘোরে। ভাবে লোক বুঝি তাকে উপহাস করছে; কিন্তু তার মনটি অত্যন্ত সরল, কোনরূপ হিংসা-দ্বেষ নেই।
শিরঃরোগ। -শিরঃরোগের সাথে হাত-পা শীতল। রোগী মাথার ভিতর ঠান্ডা বোধ করে, মনে করে যেন মাথার উপর একখন্ড বরফ চাপান আছে (অ্যাগারিকাস, আর্স, আর্ণিকা, চেলিডো, অরাম – মিউর, সাম্ফ)। অত্যধিক ঘাম, তাতে বালিশ ভিজে যায়। বায়ু সেবন করলে, চলাফেরা করলে বাড়ে (নাক্স, নেট্রাম-মিউর, ফস)। সকালবেলা মাথাধরার সাথে গা-বমি-বমি করে (ল্যাকে, বের হয়, তা ঘন পিচুটিতে পরিপূর্ণ ও জ্বালা। ঠান্ডা হাওয়া লাগলে চোখ হতে বেশী স্রাব নেট্রাম-সাল্ফ, থেরি)। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলে, গ্রীষ্মকালে ও সর্দিহীন অবস্থায় মাথার যন্ত্রণা বাড়ে। ঋতুকালে মাথায় রক্তসঞ্চয় হয়ে শিরঃরোগ দেখা দিলে এবং মাথাটি গরমবোধ হলে, ক্যাল্কে-কার্ব উপযোগী। নবপ্রসূতির চুল উঠে যায় (নেট্রাম-মিউর, সিপিয়া)।
শিশুরোগ। -পুঁয়ে পাওয়া (রিকেটিক) শিশুর মাথাটি প্রকান্ড এবং ঘুমিয়ে থাকলে এত ঘাম হতে থাকে যে, বিছানা ও বালিশ ভিজে যায়। এটার শিশু নাদুস-নুদুস, থলথলে চেহারাবিশিষ্ট। শরীরের হাড়গুলি, বিশেষতঃ মাথার হাড়গুলি নরম। দাঁত উঠবার সময় শিশুদের ব্রঙ্কাইটিস, বুকে সর্দি ঘড়ঘড় করে। রাত্রে কাশি শুষ্ক হয়। নিদ্রার মধ্যে মাথা ঘামে, চুল ভিজে যায়। শিশু দুধ মোটেই সহ্য করতে পারে না। দুধপান করলে টক গন্ধযুক্ত ছানা-কাটা দুধ বমি করে, বাহ্যে যা করে তাও ছানা-কটা টক গন্ধযুক্ত। এটার শিশুদের শীঘ্রই ঠান্ডা লাগে ও সর্দি হয়। পা দু’খানিতে হাত দিলে মনে হয় যেন বরফ লাগান আছে। এইসব শিশুর ধীরে ধীরে দাঁত উঠে। দন্তোদ্গমকালে শিশুর তড়কা (বেলেডোনায় কাজ না হলে ক্যাল্কে-কার্ব উপযোগী)। শিশুর অতিসার -অম্লান্ধী মল ও বমন, মলের বর্ণ হরিদ্রাবর্ণ (ঈথুজা-শিশু যা খায় তাই বমি করে দুর্বল হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, পরক্ষণেই আবার খেতে চায়। অ্যান্টিম-ক্রুড শিশু ছানাকাটা বমন করে আর দুধ পান করতে চায় না)। শিশুর হাইড্রোসিফেলাস – সান্কারের পর কাজে আসে। ক্যাল্কেরিয়া-কার্বের পর সাঙ্কার ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়, কিন্তু সাক্ষারের পর ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব উত্তম। তুলনীয়। – মার্কুরিয়াস – মাথা বড় এবং হাড় শীঘ্র জোড়া লাগে না। গ্রন্থির স্ফীতি এবং সেটাতে পুঁজসঞ্চয়। প্রচুর পরিমাণ রাত্রিকালীন ঘাম। ক্যাল্কেরিয়া ফস – পাতলা, শীর্ণ, রক্তহীন চেহারার শিশু। গ্রীবার দুর্বলতা সেজন্য শিশু মাথা তুলতে পারে না। অ্যাব্রোটেনাম-মুখমন্ডল কুঞ্চিত, বৃদ্ধের মত দেখায়। উপযুক্ত আহার সত্ত্বেও শিশু ক্রমে শুকাতে থাকে, পায়ের দিকে বেশী শুকায়। আয়োডিন শিশু অনবরত খেতে চায়, খায়ও, তবুও গায়ে মাংস লাগে না, ক্রমে শুকাতে থাকে। গরম সহ্য হয় না, ঠান্ডা চায়। নেট্রাম-মিউর -প্রচুর পরিমাণ আহার সত্ত্বেও ক্রমে শুকাতে থাকে, ঘাড়ের পিছনদিক বেশী শুকায় (অ্যাব্রোটেনামে পদদ্বয়)। সার্সাপ্যারিলা -এটাতেও ঘাড় বেশী শুকায়। বৃদ্ধ ব্যক্তিদের মত গায়ের চামড়ায় ভাজ পড়ে। সার্সাপেরিলা- রোগের বর্দ্ধিত অবস্থা। অত্যন্ত শীর্ণতা, গায়ের চামড়া ঝুলে পড়ে। সাইলিসিয়া – রাতে মস্তকে অত্যধিক ঘাম বালিশ ভিজে যায়। পুষ্টিকর সাহার সত্ত্বেও, শরীর ক্রমে শুকাতে থাকে, কেবল পেটটি অপেক্ষাকৃত মোটা দেখায়। শীঘ্র হাঁটতে শেখে না। সহজেই ঠান্ডা লাগে। স্যানিকুলা-শিশুর উপর হতে নিম্নদিক ক্রমে শুকাতে থাকে। প্রথমে গলদেশ, মুখ পরে পায়ের দিক শীর্ণ হয়। গলার চামড়ায় ভাঁজ পড়ে বৃদ্ধের মত দেখায় ঘুমন্ত অবস্থায় মাথায় এবং গলায় প্রচুর পরিমাণ ঘাম হয়। উত্তম ক্ষুধা এবং পুষ্টিকর আহার সত্ত্বেও শিশু দিন দিন শীর্ণ হতে থাকে।
চোখের অসুখ। -কঞ্জাঙ্কটিভাইটিস সাধারণতঃ পানিতে ভিজে সুরু হয়ে থাকে। যারা কাদা নিয়ে কাজ করে তাদের রোগ (রাস-টক্সের অনুপূরক)। কর্ণিয়ায় ক্ষত হয়ে প্রথমে পুঁজ হয়, তারপর ঐ পুঁজ চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে, সেইরূপ শিশু আলো সহ্য করতে পারে না। চোখ হতে যে স্রাব বের হয়, তা ঘন পিচুটিতে পরিপূর্ণ ও জ্বালাযুক্ত। ঠান্ডা হাওয়া লাগলে চোখ হতে বেশী স্রাব বের হয়। কর্ণিয়ার ক্ষতের জন্য কর্ণিয়া অপরিষ্কার দেখা যায়। সে কোন জিনিষের এক পাশ দেখতে পায়, অন্য পাশে দেখতে পায় না। তুলনীয়। দ্রব্যের ডানদিক দেখতে পায় না – লিথিয়াম-কার্ব। বামার্দ্ধ দেখতে পায় না-লাইকোপোডিয়াম। কর্ণিয়ার অস্বচ্ছতা ও ওপাসিটির জন্য ক্যাল্কে-কার্ব সর্বশ্রেষ্ঠ ঔষধ (স্যাক্কা-অফি, এপিস, কেলি-বাই, নেইট্রিক-অ্যাসিড, নেট্রাম-সাক্ষ প্রভৃতি ঔষধ অবস্থাভেদে কাজ করে)। স্যাক্কারাম-অফিসিনেল – ক্যাল্কেরিয়ার ধাতুবিশিষ্ট শিশুদের শোথসহ কর্ণিয়ার অস্বচ্ছতা। নেইট্রিক-অ্যাসিড কর্ণিয়ার ঘাগুলি বড় হয়ে কর্ণিয়াকে নষ্ট করার উপক্রম করে। ক্যাল্কেরিয়া প্রয়োগ করার আগে এটার ধাতুগত লক্ষণ দেখে নিতে হবে।
সর্দি।-নাকের ওজিনা বা পূতিনস্যে ক্যাল্কে-কার্ব ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পূতিনস্য হয়ে রাত্রে রোগীর নাক শুষ্ক ও রুদ্ধ হয় এবং দিনের বেলা নাক হতে স্রাব বের হয়ে থাকে (নাক্স, স্যাঙ্গু)। প্রত্যেক ঋতুপরিবর্তনের সময় সর্দি হওয়া এটার বিশেষ লক্ষণ। সামান্য ঠান্ডা লাগলেই সর্দি হয়। নাক দিয়ে পানি পড়ে, হাঁচি। মাথা গরম, মুখ শুষ্ক। রাত্রে নাক শুল্ক। দিনে নাক ভিজা। স্রাব ঘন, হড়হড়ে, রক্ত লাগা। পুরাতন স্বরভঙ্গ। সকালে নাক হতে রক্ত পড়ে। উপরের ঠোঁট ও নাকের গোড়া ফোলা দেখায়।
কানপাকা ও কর্ণরোগ। -দুরারোগ্য কানপাকা (সাল্ফার, সাইলি)। এটার কানের পুঁজ অত্যন্ত ঘন, চর্বির মত, প্রদাহের জন্য কানের পর্দা ছিদ্র হয়ে গেছে। ছিদ্রের ধারগুলি মোটা এবং সেখানে ব্যথা হয়। কোন দ্রব্য খাওয়ার সময় বা চর্বণ করার সময় কানের ভিতর দপদপ করে এবং কটাস করে শব্দ হয়। পানিতে কাজকর্ম করার জন্য বধিরতা, কুইনাইন অপব্যবহার জন্য শ্রবণশক্তির ক্ষীণতা। স্কার্লেটিনার পর কর্ণমূল-প্রদাহে রাস-টক্স শ্রেষ্ঠ ঔষধ, কিন্তু ধাতুগত লক্ষণ মিলিলে ক্যাল্কে কার্বও ব্যবহৃত হয়।
অপস্মার, মৃগী, উন্মাদ। -প্রলাপের ভিতর রোগী মনে করে যেন কেউ তার সাথে বেড়াইয়া বেড়াচ্ছে, যখন সে চোখ মেলিয়া তাকায়, তখন ঐসব কিছুই দেখে না। চোখ বুজলেই নানারকমের জিনিষ দেখে ভয় পায় ও চীৎকার করে। বেলেডোনা-রোগীও এরূপ দেখতে পায়। যখন বার বার বেলেডোনার লক্ষণসকল ঘুরে ফিরে আছে, তখন ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব ব্যবহৃত হয়। ক্যাল্কে-কার্ব বেলেডোনার ক্রনিক। তাই তরুণ ও প্রবল অবস্থা কাটিয়া যাওয়ার পর ব্যবহারে উপকার হয়। উন্মাদ রোগী যখন তরুণ অবস্থা কাটার পর, মনে করে যে সে পাগল হয়ে যাবে; অথবা লোকে তাকে পাগল মনে করছে ভেবে সতর্ক হয় তখন ক্যাল্কে-কার্ব ব্যবহাৰ্য্য। স্মৃতিকাক্ষেত্রেও এমন প্রলাপ দেখা দিতে পারে। যখন কোন রোগের ভিতর রোগীর কিছুতেই ঘুম হয় না, ঘুমাতে গেলেই নানারকম ভয়ের ব্যাপার দেখতে পায়, তখন ক্যাল্কে-কার্ব প্রযোজ্য। মৃগীরোগ ধাতুগত লক্ষণ উত্তমরূপে দেখে নিতে হবে। স্নায়ুগুচ্ছে সুড়সুড় আরম্ভ হয়ে উপরদিকে উঠে। রোগিণী মনে ভাবে বুঝি তার হাতের উপর দিয়ে একটি ইঁদুর চলে গেল, এইসঙ্গে সে মূৰ্চ্ছিত হয়ে পড়ে। ভয় পেয়ে, উদ্ভেদ ইত্যাদি বসে গিয়া অথবা অত্যধিক ইন্দ্রিয়চালনার পর যদি মৃগীরোগীর ফিট হয়, তবে এটা ফলপ্রদ। এই সকল ক্ষেত্রে সালফারও ব্যবহৃত হয়, কিন্তু সাঙ্কারে উপকার না হলে ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব ব্যবহার্য্য। অজীর্ণতা হেতু মৃগীরোগে ক্যাঙ্কে-কার্ব কাজে আসে। নাক্স ভমিকা, সাম্ফার, ক্যাল্কে-কার্ব ও লাইকোপোডিয়াম এই চারিটি ঔষধের লক্ষণ একটির পর একটি এসে থাকে, ক্রমিকভাবে ব্যবহৃত হয়।
ক্ষয়রোগ-প্রবণতা।– ক্ষয়রোগে ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব প্রয়োগ করার পূর্বে রোগীর ধাতুগত লক্ষণ লক্ষ্য করা চাই। রোগী শ্লেষ্মাপ্রধান, মোটাসোটা কিন্তু একেবারেই শক্তিহীন। শুষ্ক শ্লেষ্মা, স্বরভঙ্গ ও অতিরিক্ত নৈশঘাম দেখা দেয়। ডানদিকের ফুসফুসের মধ্যম তৃতীয়াংশে নিশ্চল বেদনা থাকে। ঋতুস্রাবের আধিক্য ছিল এরূপ যুবতীগণের পক্ষেই বিশেষ উপযোগী হয়। যক্ষ্মার তৃতীয় অবস্থায়, বৈকালে ও শুয়ে পড়লে অনবরত আক্ষেপিক কাশি, কাশিতে সবুজবর্ণ দুর্গন্ধ এবং রক্তমিশ্রিত গয়ার উঠে। যক্ষ্মারোগের সম্ভাবনায় যদি উপযুক্ত লক্ষণে ক্যাল্কে-কার্ব প্রয়োগ করা হয়, তা হলে ক্ষয়রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। যে সকল রোগীর স্বরভঙ্গ থাকে অথচ গলায় কোন বেদনা নেই, কিন্তু বুকের ডানদিকে বেদনা-তাদের পক্ষে এটা অমৃতের মত। ক্যাল্কেরিয়ার অপর কয়েকটি প্রস্তুতি ক্যাল্কেরিয়া-ফস, ক্যাল্কেরিয়া-আয়োড, ক্যাল্কেরিয়া-হাইপোফসও যক্ষ্মারোগে বিভিন্ন অবস্থায় উপযোগী হয়। লক্ষণাবলীর জন্য ঐ ঐ অধ্যায় দৃষ্টব্য।
স্ত্রীজননেন্দ্রিয়ের রোগ। – স্থূলকায়া ও রক্তপ্রধানা বালিকা, চেহারা বয়স অপেক্ষা বেশী দেখায়, ঋতুস্রাব অল্প বয়সেই আরম্ভ হয়। ঋতুস্রাব অত্যধিক, দুই-তিন সপ্তাহ পরেই দেখা দেয় এবং দীর্ঘকালস্থায়ী। ক্রমে রজঃলোপ হয়ে রক্তশূন্যতা জন্মে, এই অবস্থায় ক্যাল্কে-কার্ব উত্তম ঔষধ। গন্ডমালাগ্রস্ত বালিকাদের হড়িৎরোগে ফলপ্রদ। আবার মোটাসোটা বালিকার রক্তে লোহিতকণিকার ভাগ কম, ঋতুর সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও ঋতুস্রাব হয় না; বুক ধড়ফড়ানি, শ্বাসকষ্টতা, মাথাধরা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে ক্যাল্কে-কার্ব ব্যবহার্য্য। এটার রোগিণীর মানসিক উত্তেজনা হলেই ঋতুস্রাব আরম্ভ হয়। অধিকক্ষণ পানিতে থাকলে বা পানিতে কামকর্ম করলে রজঃলোপ হয় (রাস, ডাল্কা)। ঋতুর আগে স্তন দুইটি স্ফীত ও ব্যথাযুক্ত ও যোনির বহির্দেশে ঘাম হয়। ক্যাল্কেরিয়ার রোগিণীর বমনেচ্ছা অত্যধিক এবং এরা খুব শীঘ্র শীঘ্র গর্ভবতী হয় (মার্কারি, নেট্রাম-কার্ব)। ক্যাল্কে-কার্বের রোগিণীর স্তনে অতিরিক্ত দুধ সঞ্চয় হয় (বোরাক্স, কোনায়াম) আবার দুধের অল্পতাও দেখা যায় (অ্যাসাফেটিডা, ফস)। প্রসবের পর দীর্ঘকাল স্থায়ী লোকিয়া-স্রাব এবং ঐ স্রাব দুধের মত সাদা হলে ক্যাল্কে-কার্ব ব্যবহার্য্য। তুলনীয়। -লোকিয়া-স্রাব রক্তবর্ণ-রাস-টক্স, সিকেলি, বেলেডোনা। দুর্গন্ধযুক্ত-কার্বো-অ্যানি, সিকেলি, সাম্ফার। রক্তমিশ্রিত পানির মত-কার্বো-অ্যানি। অতি অল্প হলে-কলো, হায়ো, নাক্স, প্ল্যাটি, সিকেলি, ভিরেট্রাম। অত্যন্ত ঝাঁজাল গন্ধযুক্ত হলে – ক্রোকাস, হিপার, পালস, রাস, সিকেলি।
শ্বেত-প্রদর।-শ্লেষ্মাপ্রধান ও গন্ডমালা ধাতুবিশিষ্ট স্ত্রীলোকদের, ছোট বালিকাদের (কলোফাইলাম) এবং বয়স্কা স্ত্রীলোকদের শ্বেত-প্রদর রোগে, ক্যাল্কে-কার্ব ফলপ্রদ। এটার স্রাব খুব সাদা ও পরিমাণে অধিক। ঋতুর সময় অধিক প্রদর-স্রাব বের হয়। কখন কখনও যোনিতে জ্বালা ও চুলকানি থাকে। তুলনীয়। – অ্যালুমিনা – চটচটে স্রাব, পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত গড়িয়ে আসে। আর্সেনিক -অধিক পরিমাণ দুর্গন্ধ স্রাব, হাজাকর, যোনিদেশ হেজে যায়, জ্বালা করে। বোরাক্স- ডিমের লালার মত গরম হড়হড়ে স্রাব; মাসিক ঋতুর আগে এবং পরে প্রকাশ পায়। বোভিষ্টা – বোরাক্সের মত সমস্ত লক্ষণ, কিন্তু স্রাব ততটা গরম নয়। ক্যাল্কেরিয়া-আর্স-স্রাবে যখন দুর্গন্ধ এবং রক্তসংযুক্ত থাকে তখন উপযোগী হয়। গ্র্যাফাইটিস -ঋতুস্রাবের পরিবর্তে ঋতুর আগে বা পরে প্রকাশ পায়। স্রাব দুর্গন্ধ ও দুধের মত সাদা। ইউপিয়ন-কোমরে বেদনা সহ হলদে রক্তের স্রাব ঋতুর পরে প্রকাশ পায়
গেঁটেবাত ও বাত। পুরাতন বাতরোগে ক্যাল্কে-কার্ব উত্তম ঔষধ। বাত ও গেঁটেবাত রোগীর দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হয় এবং প্রস্রাবে তলানি পড়ে, অথচ প্রস্রাব ঘোলা হয় না। অ্যালেন বলেন -যে সমস্ত লোক পানিতে কাজ করে তাদের বাতরোগে ক্যাল্কে-কার্ব উপযোগী। প্রথমে রাস-টক্স, পরে ক্যাঙ্কে-কার্ব প্রযুক্ত হয়। কটিবাতে রাস টক্সে পর ক্যাঙ্কে-কার্ব ব্যবহৃত হয়। প্রথম নড়লে বৃদ্ধি ও ক্রমাগত নড়াচড়ায় উপশম এটার প্রদর্শক লক্ষণ। (নাক্স-পাশ পরিবর্তনে কষ্ট, উঠে না বসলে পাশ ফিরিতে পারে না; সিকেলি-কর-কোমর হঠাৎ আড়ষ্ট হয়ে যায়)। ধাতুগত লক্ষণ মিলিলে ক্যাল্কে-কার্ব এই রোগ আরোগ্য করে (সিনা, কষ্টিকাম, ক্রিয়োজোট)।
পুংজননেন্দ্রিয় রোগ। -অতিশয় সম্ভোগবাসনা হতে জননেন্দ্রিয়ের দুর্বলতা রোগে, নাক্স, সাঙ্কার, ক্যাল্কে-কার্ব ও লাইকো এই চারিটি ঔষধ একটি চক্রের বিভিন্ন অংশের মত পর পর কার্যকরী হয়। নাক্স ভম প্রথা ঔষধ, অত্যন্ত কামপ্রবৃত্তি, দুর্বলতা কম, কিন্তু মানসিক উত্তেজনা। সালফার-দুর্বলতা সহ স্বপ্নদোষপ্রবণতা। ক্যাল্কে-কার্ব-ধারণাশক্তির অভাব, মাথাঘোরে, পা টলমল করে এরূপ অবস্থা। লাইকোপোডিয়াম সম্পূর্ণ ধ্বজভঙ্গ, কিন্তু প্রবৃত্তির অভাব নেই।
মূত্ররোগ।– পাথুরী; ডাঃ হিউজেসের মতে ক্যাল্কে-কার্ব মূত্রপাথুরী ও পিত্ত-পাথুরীর একটি শ্রেষ্ঠ ঔষধ। সাংঘাতিক বেদনার সময় এই ঔষধের ৩০ শক্তির ২/১ মাত্রা সেবনে সুফল পাওয়া যায়, বেদনার সাথে ঘাম দেখা দেয়। প্রস্রাব করার সময় মূত্রনলী মধ্যে জ্বালা ও বার বার বেগ। প্রস্রাব লাল ও কপিশবর্ণ, দুর্গন্ধ অম্লযুক্ত। প্রস্রাবে কখনও শ্বেতবর্ণের, কখনও ইটের গুঁড়ার মত তলানি পড়ে। ভিজা স্যাঁতসেতে মেজেতে বাস (অ্যারেনিয়া) বা পানিতে কাজ করার জন্য প্রস্রাব লোপ পেলে, ক্যাল্কে-কার্ব ফলপ্রদ। ক্যাল্কেরিয়ার মত চায়নাও পাথরী রোগের একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। এটা যেমন প্রতিষেধক তেমনি প্রবল যন্ত্রণার সময়ে ব্যবহারে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। সার্সাপ্যারিলা- পাথরী বের হয় করাবার এটার বিশেষ ক্ষমতা আছে। কিডনীতে তীব্র বেদনাসহ প্রস্রাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথরী দেখা যায়।
গ্রন্থিরোগ। -ঘাড়ের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থিগুলি ফুলে শক্ত হয়ে যাওয়া, ক্যাল্কেরিয়ার একটি বিশেষ লক্ষণ (আয়োড, কোনা, ব্যাসিলি)। রোগীর পিঠে অত্যন্ত ব্যথা হয়।
আঘাত।– কেন্ট বলেন- আছাড় খেয়ে পড়ে যাবার ফলে আক্রান্ত স্থানে ব্যথা হলে, প্রথমে আর্ণিকা, উপশম না হলে রাস-টক্স এবং সর্বশেষে ক্যাল্কে-কার্ব ব্যবহাৰ্য্য
জ্বর। -ঠান্ডা হাওয়ায় ও স্যাতসেতে ঘরে বসবাস, ঠান্ডা পানিতে দাঁড়িয়ে কাজ করা হেতু জ্বর দেখা দেয়। কুইনিন চাপা জ্বরে উপযোগী। এটার জ্বর বেলা ২টা আবার অনেক সময় বেলা ১১টা বা ৪টা হতে ৭টার মধ্যে আসে। জ্বরের পূর্বে রোগীর সমস্ত সন্ধিস্থানে টেনে ধরার ভাব, সেইসঙ্গে মাথা ও শরীরে ভারবোধ। শীতাবস্থা-শীতের সাথে পিপাসা, যত শীত হবে শরীর তত ঠান্ডা অনুভব হবে। এই ঔষধে আর্সেনিকের মত পর্যায়ক্রমে শীত ও উত্তাপ দেখা দেয়। উত্তাপাবস্থায় পিপাসার অভাব, মাথায় গরম বোধ, উত্তাপের জন্য গায়ের আবরণ খুলে ফেলতে চায়। ঘামাবস্থায় পিপাসা নেই, সামান্য নড়াচড়ায় প্রচুর গরম ঘাম বের হয়। গাম হওয়ার পরই রোগী নিদ্রিত হয়ে পড়ে, ঘুমের ভিতর মাথায় প্রচুর ঘাম হয়। ক্যাল্কেরিয়া-কার্বের রোগী ডিম খেতে খুব ভালবাসে। ঘুম ভাঙ্গিবার পর জিহবা ভয়ানক শুষ্ক বোধ করে, জিহবায় সাদা লেপ পড়ে, মুখে টক ও তিক্ত স্বাদ এবং মুখ হতে ভয়ানক বিশ্রী গন্ধ বের হয়।
টাইফয়েড জ্বর।-ক্যাল্কেরিয়া-কার্ব অথবা বেলেডোনা কেউই প্রকৃত টাইফয়েড ঔষধ নয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিকার লক্ষণে উপযোগী হয়ে থাকে। রিকার বেলেডোনার মত প্রচন্ড নয়; কিন্তু রোগী বিকারে বিভীষিকা স্বপ্ন দেখে। চৈতন্যের মধ্যে অস্থির; চীৎকার করে, অগ্নি, নরহত্যা প্রভৃতি সম্বন্ধে প্রলাপ বকে। শিশুর ক্রিমিবিকার রোগে ক্যাল্কেরিয়া-কার্বের বিশেষ উপযোগিতা দেখা যায়। মোটাসোটা ঘামপ্রবণ শিশুর অম্লগন্ধ মল, পেটফাপা, হতে হতে চমকে উঠে; স্বপ্নের মধ্যে “মা মা” বলে কাঁদিয়ে উঠে। (সমগুণ সিনা-কিন্তু ঘাম লক্ষণ নেই)।
চর্মরোগ।– পুরু আঁস। হলদে পুঁজ। ভিজা ভিজা। মামটা পড়ে। গোঁপ দাড়ির নিকট এমন একজিমা। (সাইকুটা, মেজেরিয়াম) পানি লাগলে বৃদ্ধি। পা ঠান্ডা। সাদা মল। খোলা বাতাসে বাড়ে। গরম ঘরে ভাল থাকে। আমবাত – পুরাতন ক্ষেত্র, মস্তকে ঘাম লক্ষণ।
ফোঁড়া। -মাংসপেশীর খুব ভিতরের দিকে ফোঁড়া। বেলা ২টার সময় জ্বর ও ঘাম লক্ষণ। আঁচিল মুখে ঘাড়ে হাতে আঁচিল জন্মে, ঘা হয়, যন্ত্রণা হয়। সম্বন্ধ।-আঘাত ক্ষেত্রে-আর্ণিকা সমতুল্য; শ্বেত-প্রদরে গ্রাফাইটিস তুল্য; অম্লরোগে-লাইকো, সাফ, পাল্স তুল্য; শিশুর দন্তোদগমে-ক্যাল্কে-ফস, সাইলিসিয়া ও বেলেডোনা তুল্য; শিশুর দুধ বমনে-ঈথুজা; অ্যান্টিম-টার্ট তুল্য। বৃদ্ধি।-নড়াচড়ায়; শারীরিক বা মানসিক পরিশ্রমে; সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলে; ঠান্ডায়; আর্দ্র বায়ুতে; বর্ষাকালে; পূর্ণিমায়; ঠান্ডা পানিতে সকালে; রতিক্রিয়ার পর; দুধ খেলে; ভিজিলে; ঘাম বসে গেলে।
হ্রাস।-শুষ্ক জলবায়ু ও আবহাওয়ায়; যেদিকে ব্যথা সেই দিকে শুইলে; হাঁটিলে; (মাথা ব্যথা); অন্ধকারে; খাওয়ার পর; পিঠের উপর শুইলে; কাপড় ঢিলা করলে; ঘর্ষণ করলে; আঁচড়ালে; শুষ্ক দিনে; স্পর্শে (from being touched)।
শক্তি।— ১২, ৩০, ২০০ হতে সি-এম পৰ্য্যন্ত।