এরাণ্ডো-মরিট্যানিকা (Arundo Mauritanica)
ব্যবহারস্থল। –ইটালী দেশীয় এক প্রকার ঘাস। সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, দম্ভোদ্গম, উদরাময়, কর্ণসার, হাঁপানি, মুখে ক্ষত ও প্রস্রাবে তলানি লক্ষণে কার্যকরী।
প্রদর্শক লক্ষণ। শিশুদের মাথার চুল সম্পূর্ণরূপে উঠে যায়। রতিক্রিয়ার পর পুরুষের হাঁপানি, কষ্টকর স্বাস-প্রশ্বাস। কোলের শিশুদের দাঁত উঠবার সময় উদরাময়। মল প্রথমে শক্ত, পরে পাতলা। সবুজ মন। মলত্যাগের পর মলদ্বারে জ্বালা। মুখের ভিতর হেজে যায়। পালাস্রাব হয়। সর্দি, নাক বন্ধ থাকে। কান হতে গুঁজ বের হয়। শিশুদের অপথ্যান্মিয়া, জ্বালা, উপরদিকে চাহিতে পারে না। কানের পাশে, বুকে ও হাতে একজিমা, চুলকায় সুড়সুড় করে। হাতের আঙ্গুল ও গোড়ালতে ফাটা। প্রস্রাবে লাল বালি (ভলানি)। পেটের মধ্যে যেন জীবিত পদার্থ আছে রূপ বোধ। পায়ে ঘাম, তাতে দুর্গন্ধ। হাত-পা ফোলা।
শিশু-উদরাময়।—শিশুদের দাঁত উঠবার সময় উদরাময় রোগ। ক্যামোমিলা, ক্যাঙ্কে-ফস, ক্যাল্কে-কার্ব প্রভৃতি প্রয়োগে আরোগ্য না হলে এরান্ডো প্রয়োগ করা চলে। মল প্রথমে শক্ত পরে পাতলা। মল সবুজাভ। মলত্যাগের পর মলদ্বার জ্বালা করে। অর্শ ও সরলান্ত্রের বহির্গমন লক্ষণেও এটা ব্যবহার্য্য। রোগী মনে ভাবে তার পেটের ভিতর কি একটা নড়ছে। সদৃশ। – ক্রোকাস – রোগী মনে করে তার পেটে অথবা শরীরের কোন স্থানে কোন একটা জন্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে, সাকারেও এই প্রকারের লক্ষণ আছে। থুজার রোগী মনে করে তার পেটে যেন কোন একটা জীব নড়ছে।
সর্দি।—প্রথমে তরুণ সর্দি পরে ফিকা, হলুদ ও সবুজবর্ণের জমা সর্দি। রোগী হাঁচিলে নাক হতে জমাট শ্লেষ্মাখন্ড বের হয়। সর্দির জন্য রোগীর ঘ্রাণশক্তি লুপ্ত হয়ে যায়। সর্দি-রোগীর চোখ ও মুখের ভিতর কুটকুট করে।
কাশি। প্রথমে ইপিকাকের মত তরল ঘড়ঘড়ে কাশি হয়, অল্পক্ষণ মধ্যেই তার স্বরলোপ হয়। রোগী কাশতে কাশতে বুকে আঠার মত শ্লেষ্মা বমন করে। শুষ্ক কাশির জন্য হাঁপ ও টান হয়। রোগিণীর স্তনবৃত্তে জ্বালা ও বেদনা।
স্ত্রীরোগ।—স্ত্রীলোকদের ঋতু অকালে প্রকাশিত হয়; স্রাব কম কিন্তু দীর্ঘকালস্থায়ী। রক্ত কাল ও চাপ। মুখ হতে স্কন্ধদেশ ও বিটপাস্থি পর্য্যন্ত স্নায়ুশূলের মত বেদনা, মনে হয় যেন কেউ আগুনের ছেঁকা দিচ্ছে। গ্রীবাদেশের বামদিকে যেন একটা পোকা চলে বেড়াচ্ছে এমন অনুভব। রোগিণীর মনে সর্বদা অশ্লীল চিন্তার উদয় হয় এবং সে অতি সহজেই হাসে।
শিশুরোগ। —পুঁয়ে পাওয়া শিশুর মাথায় ঘা। সেটা পচে একটা চটার মত পড়ে এবং সেজন্য চুল উঠে যায়। চুলের গোড়ায় খুব বেদনা। মাথাটি ক্রমে চুলশূন্য হয়ে পড়ে। সদৃশ ৮ মেজেরিয়াম— পুরু হলদে বা সাদা রঙের মামড়ী, তার নীচে থাকে হলদে রঙ্গের পুঁজ। চুলকানি এবং চুলকাবার পরে জ্বালা। রাস টক্স –ফোস্কা বা উদ্ভেদ প্রথমে লাল রঙ্গের পরে মামড়ী পড়ে, পুঁজ হয়। কার্বো-অক্স-পোড়া নারাঙ্গার মত উদ্ভেদ। ভিঙ্কা-মাইনর – মাথায় একজিমা, সেটা হতে দুর্গন্ধ রস ঝরে, তাতে চুল জড়িয়ে যায়, অত্যন্ত চুলকায়। ভায়োলা-ট্রাইকোলার- মাথায় একজিমা (মুখে এবং কানের পিঠেও হয়) সেটা হতে রস ঝরে, চুলকাইলে জ্বালা করে।
জ্বর। —এরান্ডো রোগীর জ্বরের পূর্বে শীত ও পিপাসা উত্তাপাবস্থায় শরীর নীলবর্ণ ধারণ করে। সর্ব- অবস্থায়ই প্রবল পিপাসা থাকে। সামান্য একটু নড়াচড়া করলেই প্রচুর ঘাম হয়; জ্বর বিচ্ছেদের সময় খুব মাথা ঘুরায়।
প্রস্রাব। —এতে পেট্রোসেলিনামের মত মূত্রনলীর ভিতর জ্বালা ও সুড়সুড়ানি আছে। ক্যান্থারিস প্রভৃতি ঔষধের মত এটার প্রস্রাব লালবর্ণ এবং লাইকোর মত প্রস্রাবে লালবর্ণ তলানিও পড়ে।
শক্তি।–৩x, ৬, ১২, ৩০।