আর্টিমিসিয়া-ভাল্গারিস (Artemisia Vulgaris)

ব্যবহারস্থল। —শিশুদের তড়কা, যদি কৃমির জন্য হয় তা হলেও এই ঔষধটি ফলপ্রদ। ভয় পেয়ে বা কোন প্রকার চিত্ত-বিকার জন্য যদি মৃগী হয় এবং মৃগীর আক্ষেপ একটির পর একটি হতে থাকে, সেটা দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়, মৃগীর আক্ষেপের পরমুহূর্ত্তেই রোগী কাতর হয়ে নিদ্ৰায় অচেতন হয়ে পড়ে (ব্রাইয়ো), তবে এটা একটি চমৎকার ঔষধ।

প্রদর্শক লক্ষণ।—প্রচুর ঘাম, ঘামে রসুনের গন্ধ। (বোভিষ্টায় পেঁয়াজের গন্ধ, ফেল্যাড্রিয়ামে মিষ্টগন্ধ)। রঙীন আলোক দেখিলে মাথা ঘোরে। মুখ বাঁদিকে বেঁকে যায়। মাথা পিছনদিকে ঝুলে পড়ে। রাত্রে ঘুমাতে ঘুমাতে উঠে ও কাজ করে। সকালে তার কিছুই মনে থাকে না। স্বপ্ন সঞ্চরণ। পর পর অনেকগুলি কল্ভাসন হয়। তারপর কিছুক্ষণ ভাল থাকে। হস্তমৈথুনের পর মৃগী। ভয় পাবার পর মৃগী। মানসিক উত্তেজনার পর মৃগী। মৃগীর পূর্বে খিটখিটে ভাব, উত্তেজনাপূর্ণ স্বভাব। মাথায় আঘাত, মাসিক ঋতুর গোলমালের জন্য রোগ ও দাঁত উঠবার সময় মৃগী। মৃগীর সঙ্গে প্রচুর ঘাম। জিব কামড়ায়। প্রস্রাব ও মলত্যাগ করে। ডানদিকে খেঁচুনি, বাঁদিকে পক্ষাঘাত।

স্নায়ুরোগ ও মৃগী।—আক্ষেপ পৰ্যায়ক্রমে হতে থাকলে এটাই শ্রেষ্ঠ ঔষধ। কয়েকবার ঘন ঘন আক্ষেপ হওয়ার পর অনেকক্ষণ ভাল থাকে। আক্ষেপের পর রোগী ঘুমিয়ে পড়ে। রোগী কোথাও যেতে যেতে হঠাৎ থেমে যায় তারপর পাগলের মত শূন্যদৃষ্টিতে চারিদিকে তাকায় ও আপন মনে বিড়বিড় করে কথা বলে। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনকারীদের মৃগীরোগেও ফলপ্রদ। স্বপ্নে কথা বলা ও স্বপ্নবিচরণ জন্যও এটা ফলপ্রদ; কিন্তু স্বপ্নের সময় যে কাজ করে রোগী তা ভুলে যায়। সদৃশ। — অ্যাসিন্থ — ডাঃ হার্বাট বলেন—মৃগীর ফিট হওয়ার পূর্বে মাথা ঘোরে, কে যেন একটা চোখের সম্মুখে আছে দেখে, সমস্ত শরীর কাঁপে, দাঁত কড়মড় করে, সম্পূর্ণ অচেতন হয় না, এরূপ ক্ষেত্রে বিশেষ ফলপ্রদ ঔষধ। শিশুদের উপর ক্রিয়া অধিক। বিউফো—কামেন্দ্রিয়ের বিকৃতির জন্য, রোগী মৃগী হওয়ার পূর্বে ভয়ানক চীৎকার করে। মৃগীর আক্রমণের পূর্বে একপ্রকার সড়সড়ি অনুভূত হয়ে থাকে, সেটা জননেন্দ্ৰিয় হতে আরম্ভ করে সর্বশরীরে চালিত হয়। মৃগীর আক্রমণের পর রোগী অচৈতন্যাবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে। (আর্টিমিসিয়া, হাইয়ো)। ইগ্নেসিয়া— রোগীর মৃগীর সময় পাকস্থলী হতে কি যেন একটা পদার্থ উপরের দিকে ঠেলে উঠে। কুপ্রাম-মেটালিকামের মৃগীর ‘সড়সড়’ ভাব হাঁটু হতে আরম্ভ হয়ে শরীরের উপরের দিকে চালিত হয়। এ্যাসিড-হাইড্রোর মৃগীর ফিট আরম্ভ হওয়ার পূর্বে মুখে পানি উঠে, গা-বমি-বমি ও বমনের উপক্রম হয়।

চোখের রোগ।—রঙ্গীন আলোকের ভিতর কোনরূপ চোখের কাজ করতে গেলে মাথা ঘোরে ও চোখের ভিতর বেদনা অনুভব করে। কিছুক্ষণ চোখের কাজ করার পর দৃষ্টিশক্তি ঘোলা হলে বা ঝাপসা দেখিলে এবং রোগী তার চোখ রগড়ায় আর সেটাতে উপশম অনুভব করলে এটাই ঔষধ।

ক্রিমি। —ক্রিমির জন্য শিশুদের তড়কা রোগে এটা উপযোগী। সিনার শিশু হঠাৎ আড়ষ্ট হয়ে যায় এবং তার গলার মধ্যে কোঁ কোঁ শব্দ হয়। এরূপ তড়কায় – সিকুটা, কোয়াসিটা এবং ভিগো বিশেষ উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

স্ত্রীরোগ।— গর্ভাবস্থায় জরায়ুর ভিতর ভয়ানক যন্ত্রণা এবং আকুঞ্চন গর্ভবতী মনে করে বুঝি পাত হয়ে যাবে। মাসিক ঋতুস্রাব অত্যধিক পরিমাণে হয়ে থাকে। ঋতু-বিকৃতির জন্য মৃগী রোগেও ফলপ্রদ।

শক্তি।–৩, ৬। কেউ কেউ ১x ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!