অৰ্জ্জুন (Terminelia Arjuna)
পরিচয়।—ভারতীয় ঔষধ। বহু পূর্বকাল হতেই হৃদরোগের একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ রূপে আয়ুর্বেদ মতে এবং মুষ্টিযোগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অর্জুন গাছের ছালের ক্বাথ এবং সেটার রস, কবিরাজী ঔষধের অনুপানরূপে ব্যবহৃত হয়।
হোমিওপ্যাথিক মতে সম্পূর্ণ প্রুভিং না হলেও কয়েকটি রোগে বিশেষতঃ হৃদরোগে বিশেষ উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অর্জুনের রোগী নির্জনতা ভালবাসে। অত্যন্ত ক্রোধপ্রবণ এবং উদ্বিগ্ন, প্রত্যেক জিনিষটার মন্দ দিকটাই দেখে।
পাকস্থলীতে বেদনা, গা-বমি-বমি এবং বমি হয় –ভুক্ত খাদ্য, পিত্ত, শ্লেষ্মা।
প্লীহা এবং যকৃতে টাটানি বেদনা।
হৃৎপিন্ড। মনে হয় যেন, হৃৎপিণ্ডে অতিরিক্ত রক্ত জমেছে, ভয়ঙ্কর হৃৎস্পন্দন, সময়ে সময়ে মনে হয় স্পন্দন একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে, কাশবার সময়ে হৎপিণ্ডে সূঁচফোটান বেদনা। নাড়ীর গতি মৃদু। সামান্য নড়াচড়াতেও হৃৎস্পন্দন। হৃৎপিন্ডের গতি ঠিক রাখতে সেটাকে চেপে বাঁদিকে শুইতে ইচ্ছা। তুলনীয়।—ক্যাক্টাস –অত্যন্ত স্পন্দন, বুক ধড়ফড় করে রোগী বাম পার্শ্বে চেপে শুইতে পারে না, মনে হয় যেন কেউ হৃৎপিন্ডকে জোরের সঙ্গে মুঠা করে চেপে ধরছে আবার ছেড়ে দিচ্ছে। লিলিয়াম-টাইগ্রিনাম—এতে মনে হয়, হৃৎপিন্ডকে কেউ চেপে ধরতেছে আবার ছেড়ে দিচ্ছে, এই ঔষধটি জরায়ু রোগগ্রস্তা স্ত্রীলোকদের পক্ষে অধিকতর উপযোগী। ডিজিট্যালিস এবং ক্র্যাটিগাসের সাথে তুলনা করা যেতে পারে।
বেরিবেরি।—রোগীর হৃৎপিন্ড আক্রান্ত হলে অর্জুন ব্যবহৃত হয়। এস্থলে এটা ডিজিট্যালিস্ ও ঈগলফোলিয়া ঔষধের সাথে তুল্য।
শ্বাসযন্ত্রের উপরও এটার ক্রিয়া আছে। বুকে বেদনাসহ কাশি। কাশবার সময়ে রোগী হাত দিয়ে বুক চেপে ধরে। (ব্রাইওনিয়ার মত)।
আঘাত বা পতন, সমস্ত শরীরে বেদনায় আর্ণিকার মত অর্জুনও ব্যবহৃত হয়। আঘাতজনিত চর্মে কালশিরা পড়ে, এরূপ অবস্থাতে অর্জুন উপযোগী। অস্থিভঙ্গেও এটার ব্যবহার আছে, তখন এটাকে সিম্ফাইটামের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
শক্তি।– ১x, ৩x, ৩০।