অ্যামোনিয়াকাম–গামাই (Ammoniacum Gummi)
পরিচয়।—এটা একপ্রকার আঠা হতে প্রস্তুত হয়।
ব্যবহারস্থল।—অত্যন্ত বদমেজাজি ব্যক্তিদের পক্ষে এই ঔষধ ফলপ্রদ। অত্যন্ত বাচাল ও কোন বিষয়ে তুষ্ট হয় না, সেইসঙ্গে মস্তিষ্কের জড়তা পরিলক্ষিত হয়। প্রথমে শ্লৈষ্মিক-ঝিল্লীর শুষ্কভাব দেখা যায়, পরে সেটা হতে প্রচুর শ্লেষ্মাস্রাব হয়।
বিষণ্ণ প্রকৃতি ক্ষীণদেহ বৃদ্ধ ব্যক্তিদের পুরাতন ব্রঙ্কাইটিস বা হাঁপানি রোগে এই ঔষধ বিশেষ কার্যকরী। শীতকালের কাশিতেও এটা ফলপ্রদ। এটার গয়ার অত্যন্ত চটচটে, তারের মত, রোগী যখন কাশি দিয়ে গয়ার উঠাতে যায়, তখন সে মনে করে যেন বুকের ভিতর কিছু ছিঁড়ে গেল। কেলি-বাইক্রমিকাসের সাথে তুলনীয়।
হৃদযন্ত্রের রোগের ক্ষেত্রে এটা ফলপ্রদ। রোগীর হৃদপিন্ডের গতি প্রবলতর, দপদপানি ঊর্ধ্বোদর পর্যন্ত প্রসারিত হয়। রোগী বামদিকে শয়ন করলে হৃদপিন্ডের স্পন্দন খুব বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। সদৃশ ঔষধ। —এবিস্-নায়গ্রা – হৃদপিন্ডের ক্রিয়া ভারি বোধ হয়, ধীরে চলে, কিন্তু ট্যাকিকার্ডিয়া বা অস্বাভাবিক দ্রুতকাৰ্য্য বিশিষ্ট হৃদ্পিন্ডে এটা অধিকতর উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়। বুকের ভিতরে একপ্রকার যন্ত্রণা মনে হয় সেখানে কিছু আটকিয়ে আছে যাহার জন্য রোগীকে বার বার কাশিতে হয়। অ্যাসিন্থিয়াম — হৃদপিন্ডের গতি, অসম, জোরে জোরে চলে, পিঠের দিকে হতেও তা শোনা যায়। ইউফর্বিয়াম— ক্ষীণ হৃপিন্ড, সেটার ভিতরে যেন একটা পাখী ঝট্ পট্ করছে এমন মনে হয়। ক্যাক্টাস-গ্র্যান্ডি–রোগী বামপার্শ্বে আদৌ শুইতে পারে না, বুক ধড়ফড় করে। হৃপিন্ডকে যেন কেউ জোরে মুঠা করে চেপে ধরছে আবার ছেড়ে দিচ্ছে, এমন অদ্ভুত ‘অনুভূতি। লিলিয়াম-টাইগ্রিনাম – মনে হয় হৃদ্পিন্ডকে কেউ নিংড়াতেছে, অথবা কেউ চেপে ধরছে ও ছেড়ে দিচ্ছে, জরায়ু ও ডিম্বকোষ রোগগ্রস্ত স্ত্রীলোকদের পক্ষে অধিকতর উপযোগী। কিন্তু অর্জুনের রোগী, স্পন্দন ঠিক রাখতে হৃপিন্ডকে চাপা দিয়ে বামদিকে শয়নের ইচ্ছা করে।
কুক্ষিপ্রদেশের নীচে সূঁচ ফোটান বেদনা লক্ষণযুক্ত অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগে এটা একটি কার্যকরী ঔষধ। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং কটিদেশেও বেদনা হয়। এটা ব্যতিরেকে একশিরাও আঙ্গুলহাড়া রোগেও কেউ কেউ এই ঔষধটি ব্যবহার করতে উপদেশ দেন।
চোখের অসুখ। — দৃষ্টি-বিভ্রম, চোখের সম্মুখে নক্ষত্র, আলোকের রশ্মি, ধূম প্রভৃতি দেখে –কোন কিছু পড়বার সময় সহজেই চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়ে (রুটা) এবং দিবালোক পড়লে চোখ কর্কর করে। কখনও কখনও চোখ লালবর্ণ হয় ও দপ্দপ্ করে। মাথায় আঘাত লাগবার ফলে অস্পষ্ট দৃষ্টিতেও এটা কার্যকরী। যারা কেরোসিনের আলো, গ্যাসের আলো বা ইলেকট্রিক আলোতে অধিক রাত্রি জাগিয়া কাজ করে, তাদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের চমৎকার ঔষধ। বহুমূত্র রোগেও কেউ কেউ এটা প্রয়োগ করলে উপশম দেয়।
শক্তি।–৩x, ৬x, ৩০।