অ্যালিয়ামসেপা (Allium Cepa)

পরিচয়।—পেঁয়াজ। ব্যবহারস্থল। ইনফ্লুয়েঞ্জা ও সর্দিরোগের উপযোগী।

প্রদর্শক লক্ষণ।—তরুণ সর্দি, নাকের স্রাব যেখানে লাগে সেস্থান হেজে যায়। চোখ হতে পানি পড়ে, কিন্তু তাতে কোন স্থান হাজে না। গরম ঘরে বৃদ্ধি। খোলা বাতাসে উপশম। কিন্তু ইউফ্রেসিয়ায় এটার বিপরীত লক্ষণ—চোখ দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পানি ঝরে। অ্যালিয়াম – সেপার—নাকের স্রাব হাজাকর (extremely acrid), কিন্তু চোখস্রাব হাজাকর নয় (bland discharge), অপরপক্ষে ইউফ্রেসিয়ার চোখস্রাব হাজাকর (discharge excruciating)। নাক হতে প্রচুর পরিমাণ নাক স্রাব (acrid nasal discharge)। বর্ষাকালীন সর্দি। অনুভূতি যেন নাক-মুখ দিয়ে আগুন বের হয়। ঋতুস্রাব শুরু হলে মাথার যন্ত্রণা কম আর স্রাব বন্ধ হলেই মাথাধরা দেখা দেয়। উদরাময়, সেইসঙ্গে নিঃসৃত বায়ুতে দুর্গন্ধ। লক্ষণ বাঁদিক হতে ডানদিকে যায়। পা ভিজে যাবার পর রোগ। স্বরভঙ্গ ও গলার মধ্যে পুটুলির অনুভূতি। পচনশীল ঘা, জুতার ঘা। আমবাত।

অস্ত্রোপচারের পর স্নায়ুপ্রদাহ।—বহুদিন হইল আঘাত লেগেছে অথচ তা কিছুতেই ভাল হচ্ছে না, এরূপ ক্ষেত্রেও উপযোগী।

সর্দি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা। সর্দির স্রাব প্রচুর, সেজন্য ঘন ঘন হাঁচির বেগ আসে। নাকের বড়ই ঝাঁজাল, কিন্তু চোখের স্রাব ঝাঁজাল নয়। নাকের স্রাব লেগে নাক ঠোঁট হেজে যায়, কিন্তু চোখ হতে যে পানি ঝরে তাতে গন্ডস্থল হাজে না। সদৃশ ইউফ্রেসিয়া – এটাতেও নাক ও চোখ হতে স্রাব হয়, পার্থক্য –ইউফ্রেসিয়ায় চোখ হতে যে স্রাব বের হয় তাতে হেজে যায়। অ্যালিয়াম-সেপার পর ফস্ফোরাস অতি চমৎকার কাজ করে। অ্যাকোনাইট—শীতকালে বা হঠাৎ ঠান্ডা হাওয়া লেগে সর্দি হয় এবং সেইসঙ্গে জ্বর দেখা দেয়। ক্যাঙ্কার-সর্দির উপক্রমাবস্থায় ক্যাম্ফার সেবন করলে সর্দি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। অ্যাস্থিমিস-নোবেলিস – নাক হতে পানির মত প্রচুর সর্দিস্রাব হয়। পালসেটিলা – নাকের সামান্য সর্দি সহ মুখ ও হাত-পায়ে জ্বালা, জিহবা ও মুখ শুকিয়ে যায় অথচ পিপাসা থাকে না, খোলা বাতাসে উপশম। পুরাতন সর্দিরোগে ঘন ঘন পুঁজের মত সর্দিস্রাব।

পলিপাস। রোগীর নাকের ভিতর রসুনের কোষের মত একটি মাংসখন্ড গজায়, ঐ সঙ্গে সর্বাঙ্গে বেদনা, মাথাব্যথা ও জ্বরভাব থাকে। শিরঃরোগের সাথে পলিপাস লক্ষণে—স্যাঙ্গিউনেরিয়া ও অ্যাসিড-নাইট্রিক উপযোগী। দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব থাকলে, ক্যাডমিয়াম-সালফ। বহুদিনের পলিপাস ও সর্দিয়াব লক্ষণে সোরিণাম। নাকের পলিপাস রোগে অ্যাগ্রাফিস-নিউট্যান্স একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ রোগী এজন্য ঘুমাতে পারে না এটার বিশেষ লক্ষণ।

কাশি। —তরুণ সর্দির সাথে কাশিতে গলা ভেঙে যায়। গলার ভিতর বেদনা, কাশবার সময় মনে হয় যেন গলার ভিতর ছিঁড়ে গেল। এমন অবস্থায় অ্যাকোনাইটও বিশেষ উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রথম প্রাদাহিক অবস্থাতেই এটা উপকারী। শুষ্ক, ঠাণ্ডা হাওয়া হতে জাত ব্যাধির উৎপত্তি।

শিশুর কানের যন্ত্রণা। —সর্দির সাথে শিশুর ভয়ানক কানের যন্ত্রণা। শিশু অনবরত চীৎকার করে, এরূপ ক্ষেত্রে ক্যামোমিলাই ব্যবহৃত হয়, কিন্তু অ্যালিয়াম-সেপাও ফলপ্রদ ঔষধ। ঠান্ডা লেগে অতিসার, মুখের পক্ষাঘাত, স্বরনলী-প্রদাহ, ফুসফুস্ -প্রদাহ, আঙ্গুলহাড়া প্রভৃতি। রাতে বর্দ্ধনশীল, শিশুদের কর্ণমূল এবং কানপাকা হেতু বেদনায় পালসেটিলাও উপযোগিতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উত্তাপে বৃদ্ধি এবং ঠান্ডা হাওয়ায় উপশম। ক্যামোমিলার শিশু খিটখিটে, বদমেজাজী, আর পালসেটিলার শিশু শান্তশিষ্ট হলেও বেদনায় অস্থির হয়।

স্নায়ুশূল।—সূক্ষ্ম স্নায়ুসমূহের তীব্র শূল বেদনায়, বিশেষতঃ মুখের, বুকের ও মাথায় স্নায়ুর শূলবেদনায় উপযোগী। বহুদিনের পুরাতন আঘাতাদির পর ঐ স্থানের স্নায়ুশূল।

প্রতিষেধক। আর্ণিকা। অনুপূরক। —ফস্, পালস্, থুজা।

 শক্তি।–৩x, ৬x, ৩০।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!