অ্যাগ্নাসক্যাষ্টাস (Agnus Castus )

ব্যবহারস্থল। —ধ্বজভঙ্গ, বন্ধ্যাত্ব, প্রদর, স্তনদুধের অভাব প্রভৃতি রোগ।

ক্রিয়াস্থল।—স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই জননেন্দ্রিয়, তবে পুরুষদের রোগেই বেশী।

প্রদর্শক লক্ষণ।— অন্যমনস্ক, খিটখিটে। বিষাদ, আসন্ন মৃত্যুর ভয়। মাথার যন্ত্রণা, বদ্ধ ঘরে বৃদ্ধি। সন্ধ্যায় পড়বার সময় চোখ জ্বালা করে, আলোক সহ্য হয় না। কানে কম শোনে, কানে শোঁ শোঁ করে। নাকে নানারূপ গন্ধ পায়। জিবে সাদা লেপ। খাওয়ার পর পেট ফুলে উঠে, চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণে গা-বমি-বমি। উদরাময়; দাঁড়ালে মলবেগ পায়, দুর্বলতা। মলত্যাগের কোঁথ দিলে শুক্রপাত হয়। মলদ্বার ফাটা। ধ্বজভঙ্গ, ইচ্ছার অভাব, লিঙ্গ শক্ত হয় না। লিঙ্গ ঢিলা হয়ে যায়, ছোট হয়ে যায়। অন্ডকোষ ঠাণ্ডা, ফোলা ও শক্ত। মেহ রোগগ্রস্তের গ্লাট ও ধ্বজভঙ্গ, হলদে স্রাব। হলুদে প্রদরস্রাব। অজ্ঞাতসারে স্রাব হতে থাকে। স্ত্রীলোকের ছেলে হয় না, বন্ধ্যা। স্ত্রীলোকের বন্ধ্যাত্বদোষ নষ্ট করার জন্য লক্ষণানুসারে ব্যারাইটা-মিউর, বোরাক্স, কোনায়াম, হেলোনিয়াস, আয়োডিন, মেডোরিনাম, নেট্রাম-মিউর, প্ল্যাটিনা, স্যাবাইনা প্রভৃতি ঔষধ ব্যবহৃত হতে পারে। বন্ধ্যাত্বের অন্যতম উৎকৃষ্ট ঔষধ—দেশীয় অশ্বগন্ধা (Withania Somnifera). মুষ্টিযোগ হিসাবে এটার ক্বাথ ঘৃত বা দুধ সহ পান করার বিধি আছে, হোমিওপ্যাথিক মূল-অরিষ্ট ঔষধ, দশ ফোঁটা মাত্রায় ব্যবহারে ফল পাওয়া যায়। এটা যেমন বল, বীর্য্য, কান্তিবৰ্দ্ধক, তেমনি কৃশতা পুষ্টিকারকরূপে ব্যবহৃত হয়। প্রসবের পর ফুল পড়ে না। দুধ পরিমাণে অল্প বা মোটেই জন্মে না। মোচড় লাগার পর পায়ের গোছে ফোলা (Ankles) সমস্ত শরীরে থেঁতলান ব্যথা। গাঁটে ফোলা ও প্রদাহ। রোগী অনিয়মিত ইন্দ্রিয়সেবার ফলে স্মৃতিশক্তি হীন। নেহ ও সেইসঙ্গে ধ্বজভঙ্গ।

মন। —অল্প বয়স হস্তমৈথুনাদি করে রোগীর স্মৃতিশক্তি লুপ্ত হয়, কিছুই স্মরণ রাখতে পারে না। দুই-তিন বার পাঠ না করলে পঠিত বিষয়ের ভাব গ্রহণ করতে পারে না। রোগী অত্যন্ত ভীরু হয়ে পড়ে, কোনরূপ সাহস থাকে না। মৃত্যুভয়, অকালবার্দ্ধক্য, দুর্বলতা। রোগী যত্রতত্র মৃগনাভী বা মাছের গন্ধ পায়। ডাঃ হেরিং বলেন –যে সমস্ত যুবক অল্প বয়সেই অতিরিক্ত শক্তিক্ষয়ের ফলে বৃদ্ধবৎ আকৃতিবিশিষ্ট হয়ে পড়ে এবং স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ হয়, তাদের পক্ষে কার্যকরী।

পুংজননেন্দ্রিয়ের শিথিলতা বা ধ্বজভঙ্গ। —স্নায়বিক দৌর্বল্য ও স্মৃতিশক্তির হ্রাস। ধ্বজভঙ্গ, পুরুষাঙ্গ শীতল, ক্ষুদ্র, কোমল এবং যদি কোন রকমের জননেন্দ্রিয় উত্তেজিত হয়ে রমণকাৰ্য্য সম্পাদিত হয়, তা হলে মৈথুনের পর রাতে শুক্রপাত হয়।

সদৃশ। -অ্যাসিড ফস – বার বার শুক্রক্ষয় জনিত ধ্বজভঙ্গ। মৈথুনের পর বমনেচ্ছা সেই সাথে অত্যন্ত অবসন্নতা এবং ম্রিয়মান ভাব।

আৰ্জ্জ-নাই –সম্পূর্ণ ধ্বজভঙ্গের জন্য রমণাকাঙ্ক্ষা মোটেই থাকে না। স্ত্রীসংসর্গের উদ্যমেই লিঙ্গ শিথিল হয়ে পড়ে।

ব্যারাইটা কার্ব। —বৃদ্ধদের ধ্বজভঙ্গ রোগে প্রয়োজনীয় ঔষধ।

কেলিব্রোমেটাম— ধ্বজভঙ্গ রোগে ভোলা মন ও সর্বকার্য্যেই শৈথিল্য। ৩x চূর্ণ ফলপ্রদ।

ক্যাঙ্কে- কার্ব—ধ্বজভঙ্গ তথাপি প্রত্যেক রাত্রে ৩টার সময় রমণেচ্ছা অধিক।

ক্যালেডিয়াম ক্লৈব্যভাব বা সম্পূর্ণ ধ্বজভঙ্গ। ইন্দ্রিয় শিথিল থাকা সত্ত্বেও রমণেচ্ছা অধিক।

কোবাল্টাম—কখনও আংশিক লিঙ্গোপাম হয় অথবা সম্পূর্ণ ধ্বজভঙ্গ, কিন্তু রাত্রে কামোদ্দীপক স্বপ্নের সাথে বার বার রেতঃপাত (স্বপ্নদোষ) হয়।

লাইকোপোডিয়াম –বৃদ্ধদের ধ্বজভঙ্গ রোগে যুবকদের মত কামপিপাসা, কিন্তু লিঙ্গোদ্রেক মোটেই হয় না।

কোনায়াম—রমনেচ্ছা প্রবল, কিন্তু ইন্দ্রিয়শক্তি নিতান্ত কম। কোন স্ত্রীলোক দেখলেই রেতঃস্খলন হয়।

নুফার-লুটিয়া – এটার ধ্বজভঙ্গ রোগীর কামোদ্দীপক আলোচনাতে বা কাজকারণেও লিঙ্গোপাম হয় না। রমণশক্তি মোটেই থাকে না।

সেলিনিয়াম- ধ্বজভঙ্গ অথচ ভয়ানক রমনেচ্ছা, কোন প্রকারে যদি লিঙ্গোদ্গম হয়, সঙ্গে সঙ্গে রেতঃপাত হয়ে যায়।

সালফার—রমণশক্তি খুব কমে যায়। উপবিষ্টাবস্থায়, মলত্যাগকালে এবং ঘুমের ঘোরে রেতঃপাত হয়।

স্ত্রীরোগ। শিথিল ইন্দ্রিয়ের জন্য অজ্ঞাতসারে স্বচ্ছ পাতলা প্রদরস্রাব হয়। সেটা কাপড়ে লাগবার পর পীতবর্ণের দাগ ধরে। এই ঔষধ সেবনে বন্ধ্যাত্ব দূর হয়। প্রসূতির স্তনে দুধের অভাব হলে এটা কার্যকরী। সদৃশ – অ্যাসাফিটিডা –প্রসূতির স্তনে দুগ্ধাভাবের সাথে সামান্য স্পর্শে বেদনানুভব। ল্যাক্-ডিফ্লো- যে সকল স্ত্রীলোকের স্তনে দুধ হয় না, তাদের জন্য এই ঔষধ অতি মূল্যবান। ২৪ ঘণ্টার ভিতর উপকার দর্শে। রিসিনাস — স্তন্যপায়ী শিশুদের মাতার স্তনে দুধের অভাব অথচ স্তনযুগল স্ফীত ও পূর্ণ।

পায়ের রোগ।—বেশী চলাফেরা করার ফলে উরুদ্বয়ের ঘর্ষণ জনিত ঘা বা গুলফাদি সন্ধি মচকাইয়া ব্যথা।

অ্যাগ্নাসের পর প্রায়ই লাইকো, সোরিণাম ব্যবহৃত হয়।

শক্তি।–৬, ৩০, ২০০।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!